
হিউমিক এসিড কী ? ব্যবহারে কী কী উপকার হয় ও এর সকল ক্ষতিকর দিক ।
হিউমিক এসিড কী ?
হিউমিক এসিড মূলত একটি জৈবিক উপাদান। এটা প্রাকৃতিক ভাবে মাটির ভিতরে বিভিন্ন গাছ আর প্রাণী দেহ অবশেষ ও অনুজীবের ক্রিয়াকলাপে কারণে উৎপন্ন হয়, তাই হিউমিক এসিড বিভিন্ন কয়লা খনিতে “লিগনাইট” রুপে পাওয়া যাই, লিগনাইট প্রসেসিং এর মাধ্যমে হিউমিক এসিড বানিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি বাজারজাত করে ।
হিউমিক এসিডের ব্যবহার :
হিউমিক এসিড উদ্ভিদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ও মাটির উর্বরতা ফিরিয়ে আনতে খুবি কার্যকর তাই এটার ব্যবহার কৃষি পর্যায়ে সব থেকে বেশি ।
জমিতে হিউমিক এসিডের ব্যবহার কেন করবেন :
আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষক জমিতে অত্যধিক পরিমাণে সার প্রয়োগ করে । একই জমিতে উলটাপালটা সার ব্যবহার করলে মাটিতে প্রচুর পরিমাণে জটিল যৌগ তৈরি হয় , এই জটিল যৌগ উদ্ভিদ গ্রহণ করতে পারে না , এখানে হিউমিক এসিড প্রয়োগ করলে জটিল যোগকে ভেঙ্গে যায় । এছাড়াও বিভিন্ন আগাছা নাশকের ব্যবহারে জমিতে ক্ষতিকর পদার্থ মিশে থাকে, এখানে হিউমিক এসিড ব্যবহার করলে পদার্থ এগুলি নষ্ট করে ।
হিউমিক এসিডের উপকারিতা :
হিউমিক এসিডের উপকারিতা প্রচুর, এর কিছু উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো
- উদ্ভিদের অ-শ্বসন যোগ্য জটিল খাদ্য ভেঙে সরল করে তাই উদ্ভিদ সহজেই খাবার গ্রহণ করতে পারে ।
- মাটির গঠন ও উর্বরতা ঠিক করে তাই মাটিতে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্ন উপকারী অনুজীবের জন্ম হয় ।
- মাটির লবণাক্ততা কমায় ও PH এর ভারসাম্য রক্ষা করে ।
- উদ্ভিদের শিকড় বৃদ্ধি ও এনজাইম সৃষ্টি, ফুল ও ফল ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ফলের ওজন বৃদ্ধি ও ফলের ছাল পুরু করতে সাহায্য করে ।
- উদ্ভিদের প্রতিকূল পরিবেশে বেচে থাকার ক্ষমতা বাড়ায় ও উদ্ভিদের পানি খরচ কমায় ।
- মাটির ক্ষতিকর দূষণ পদার্থ নষ্ট করে । ও মাটির পুষ্টিগুণ অপচয় রোধ করে।
- উদ্ভিদের মাটির খনিজ পদার্থ শোষণের হার বাড়ায় এবং উদ্ভিদের শিকড়ের বৃদ্ধি ঘটায় ।
- মাটিতে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি ও বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বহু গুনে বাড়ায় ।
- উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ।
- বিভিন্ন সারের সাথে হিউমিক এসিড ব্যবহার করলে সারের কার্যকারিতা দুই থেকে তিন গুণ বাড়িয়ে দেয় ।
- উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, এতে বেশি পরিমানে কোষ বিভাজন হয়, তাই উদ্ভিদের খুব দ্রুত বৃদ্ধি হয় এবং কান্ড ও পাতা খুব বড় ও মোটা হয় ।
হিউমিক এসিডের ক্ষতিকর দিক :
হিউমিক এসিড মূলত মাটি ও ফসলের জন্য খুবই উপকারী, সাধারণত এর কোন ক্ষতিকর দিক নেই।
তবে যেকোনো সারের মতো, হিউমিক এসিড অতিরিক্তভাবে ব্যবহার ক্ষতিকর হতে পারে। অতিরিক্ত হিউমিক এসিড মাটিতে খনিজ পদার্থের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, ও ওই জমিতে হিউমিক এসিড তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে।
বি.দ্র.
হিউমিক এসিড একই জমিতে বছরে সর্বোচ্চ ৩ বার ব্যবহার করা উত্তম।
হিউমিক এসিড ব্যবহার পদ্ধতি :
বাজারে দুই ধরনের হিউমিক এসিড পাওয়া যাই
- কঠিন ( গুড়া ও গ্রানুলার )
- তরল
হিউমিক এসিড কঠিন ও তরল দুইটি সারের সাথে বা মাটিতে ব্যবহার করলে বেশি রেজাল্ট পাওয়া যাই।
কিন্তু তরল স্প্রে করলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায় না।
জনপ্রিয় কিছু হিউমিক এসিডে নাম :
- জীবন ( গ্রীন বাংলা এগ্রোভেট লিমিটেড )
- হিউমিক স্টার ( এস ই আই ফার্টিলাইজার )
- হিউমিক গোল্ড ( ক্লীন এগ্রো )
- টপার গল্ড ( সুইট এগ্রোভেট )
- শক্তি হিউমিক এসিড ( ইস্পাহানি এগ্রো লিমিটেড )
- হিউমি কিং ( মিমপেক্স এগ্রোকেমিক্যালস লিঃ )