কৃষি ঘর ডটকম | Krishi Ghor | Krishi Gor এখানে উদ্ভিদ ও কৃষি প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় ও ফসলের বিভিন্ন সমস্যার সঠিক পরামর্শ প্রদান করা হয়
Product Suggestions
Featured image

ধানের আগাছা নাশক এবং ব্যবহার পদ্ধতি বিস্তারিত তথ্য

ধানের আগাছা নাশক প্রয়োগ করতে হলে ধান রোপণের বয়স ও ধান ক্ষেতে পানির উপস্থিতি আছে কি না তা বিবেচনা করতে হয়। জমিতে পানি থাকা ও না থাকার আগাছানাশক ভিন্ন ভিন্ন হয়। এগুলো হলো ;

 

  1. প্রেটিলাক্লোর
  2. এসিটাক্লোর + বেনসালফিউরন মিথাইল
  3. ২, ৪-ডি সোডিয়াম অথবা ২, ৪-ডি এ্যামাইন অথবা ২,৪-ডি বিউটাইল ইস্টার
  4. বিসপাইরিব্যাক সোডিয়াম

 

এই সকল আগাছা নাশক গুলির প্রয়োগ পদ্ধতি ও প্রয়োগের সময় ও ভিন্ন ভিন্ন আগাছা দমন করে নিচে এটা নিয়ে আলোচনা করা হলো

 

প্রেটিলাক্লোর আগাছানাশক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য :

জমিতে ধান রোপণের ১-৭ দিনের মধ্যে প্রেটিলাক্লোর ব্যবহার করতে হয়। প্রেটিলাক্লোর বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা নষ্ট করে তাই বীজ থেকে আগাছা জন্মাতে পারে না । প্রেটিলাক্লোর অলরেডি জন্মানো আগাছা দমন করতে পারে না ।

 

প্রেটিলাক্লোর আগাছা নাশক প্রয়োগ পদ্ধতি :

প্রেটিলাক্লোর প্রয়োগের জন্য ধান রোপণের বয়স অবশ্যই ১-৭ দিনের ভিতরে হতে হবে। এটি সারের সাথে প্রেটিলাক্লোর মিশিয়ে সারগুলি সমস্ত জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হয়।

 

পেটিলাক্লোর যুক্ত আগাছা নাশকের নাম :

    1. রিফিট ৫০০ ইসি (সিনজেনটা)
    2. রিজিট ৫০৫ ইসি (র‍্যাভেন এগ্রো কেমিক্যাল)
    3. লাক্লোর ৫০০ ইসি (সুইট এগ্রোভেট)
    4. মিমফিট ৫০০ ইসি (মিমপেক্স)
    5. সিলাহ ৫০০ ইসি (ইনতেফা) ইত্যাদি 

 

এসিটাক্লোর + বেনসালফিউরন - ইথাইল আগাছানাশক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য :

এখানে “ এসিটাক্লোর ” বীজ থেকে আগাছা জন্মাতে দেয় না এবং “ বেনসালফিউরন “ দ্বিবীজপত্রী এবং সেজেস জাতীয় আগাছা দমন করে নিচে আগাছা গুলির নাম দেওয়া হলো 

সেজেস / সেজ আগাছা:

চেঁচড়া, হলদে মুথা, বড় চুচা, জয়না ইত্যাদি।

দ্বিবীজপত্রী আগাছা:

কচুরিপানা, টোপাপানা , সেজ, ক্ষুদিপানা, শুষনি শাক, বথুয়া, বিল মরিচ,শুষনি শাক, ঝিল মরিচ, চাঁদ মালা, পানি কচু, পানি লং, পানি ডগা ইত্যাদি। 

 

এসিটাক্লোর + বেনসালফিউরন - ইথাইল আগাছা নাশক প্রয়োগ পদ্ধতি :

ধানের রোপণের ৮ - ২৫ দিনের ভিতর এবং জমিতে পানির উপস্থিতিতে এটি প্রয়োগ করা যায়। প্রয়োগের জন্য এসিটাক্লোর + বেনসালফিউরন - ইথাইল কে সারের সাথে মিশিয়ে অথবা স্প্রের মাধ্যমে ধান ক্ষেতে প্রয়োগ করতে হয়।

 

সুবিধা :

ব্যবহারের পর নতুন করে কোনো আগাছা জন্মাতে পারে না ও বিভিন্ন শ্রেণীর আগাছা মরে।

 

অসুবিধা :

এটি ব্যবহার করলে ধান কিছুটা লাল হয়ে যায় কিন্তু কয়েকদিন পর তা ঠিক হয়ে যায়। 

 

এসিটাক্লোর + বেনসালফিউরন - ইথাইল উপাদান যুক্ত আগাছা নাশকের নাম :

    1. নির্মূল ১৮ ডব্লিউপি (ইয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ)
    2. বেনেস জি ১৮ ডব্লিউপি (জিএমই এগ্রো লিঃ)
    3. এক্সিলেন্ট ১৮ ডব্লিউপি (ক্লীন এগ্রো)
    4. বেনব্যাক ৩০ ডবিউপি (এসএএম এগ্রো কেমিক্যাল)
    5. সানচান্স ১৮ ডব্লিউপি (ম্যাকডোনাল্ড ক্রপ কেয়ার লিঃ)
    6. বেটাপাওয়ার ১৮ ডব্লিউপি (সুইট এগ্রোভেট)

 

২, ৪-ডি সোডিয়াম সল্ট অথবা ২, ৪-ডি এ্যামাইন অথবা ২,৪-ডি বিউটাইল ইস্টার আগাছানাশক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য :

ধানের রোপণের ১৫- ৩৫ দিনের ভিতরে এটি প্রয়োগ করা যায়। ২, ৪-ডি সোডিয়াম অথবা ২, ৪-ডি এ্যামাইন অথবা ২,৪-ডি বিউটাইল ইস্টার গুলি জমির দ্বিবীজপত্রী ও সেজেস আগাছা দমন করে। নিচে এই আগাছা গুলির নাম দেওয়া হলো

সেজেস / সেজ আগাছা :

চেঁচড়া, হলদে মুথা, বড় চুচা, জয়না ইত্যাদি। 

দ্বিবীজপত্রী আগাছা :

কচুরিপানা, টোপাপানা , সেজ, ক্ষুদিপানা, শুষনি শাক, বথুয়া, বিল মরিচ,শুষনি শাক, ঝিল মরিচ, চাঁদ মালা, পানি কচু, পানি লং, পানি ডগা ইত্যাদি। 

 

২, ৪-ডি সোডিয়াম অথবা ২, ৪-ডি এ্যামাইন অথবা ২,৪-ডি বিউটাইল ইস্টার উপাদান যুক্ত আগাছা নাশকের নাম :

    1. রেজর ৮০ ডব্লিউপি (ক্লীন এগ্রো)
    2. লাইক ৪৮ এস এল (সুইট এগ্রোভেট লি:)
    3. ২,৪-ডি উইডার (ম্যাকডোনাল্ড ক্রপ কে: লি:)
    4. উইডকিল ৪৮০ (এসএএম এগ্রো কেমিক্যাল)

 

ব্যবহার পদ্ধতি :

ধান ক্ষেতের সকল আগাছা জন্মানোর পরে “ ২, ৪-ডি সোডিয়াম অথবা ২, ৪-ডি এ্যামাইন অথবা ২,৪-ডি বিউটাইল ইস্টার ” ব্যবহার করতে হয় । ব্যবহারের জন্য এটা সারের সাথে অথবা স্প্রের মাধ্যমে ছিটিয়ে ব্যবহার করতে হয়।

 

সুবিধা :

এটি সেজ ও দ্বিবীজপত্রী আগাছা সম্পূর্ণ দমন করে।

 

অসুবিধা :

এটি কেবল মাত্র জন্মানো আগাছা দমন করে।

 

বিসপাইরিব্যাক সোডিয়াম আগাছানাশক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য :

ধান রোপণের ১২- ৩০ দিনের ভিতরে বিসপাইরিব্যাক সোডিয়াম ব্যবহার করা যায়। এটি ধানের জমি থেকে শ্যামা, ক্ষুদে শ্যামা, এরাইল, হলদে মুথা, বড় চেচড়া, ছোট চেচড়া, পানি ডগা, বড় চূড়া, জৈনা, ঝিল মরিচ, শুষনি শাক, ইত্যাদি আগাছা দমন করে।

 

বিসপাইরিব্যাক আগাছানাশক সোডিয়াম প্রয়োগ পদ্ধতি :

ধান রোপণের ১২- ৩০ দিনের ভিতরে বিসপাইরিব্যাক সোডিয়াম প্রয়োগ এবং প্রয়োগের জন্য অবশ্যই ধান জমিটি পানি শূন্য এবং কিছুটা শুকনা হতে হবে। এটি স্প্রের মাধ্যমে সমস্ত জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।

 

বিসপাইরিব্যাক আগাছানাশক সোডিয়াম উপাদান যুক্ত আগাছা নাশকের নাম :

    1. টাইব্যাক ১০ এসসি (সুইট এগ্রোভেট)
    2. নগদ ৩০০ ডব্লিউ পি (গ্রীন বাংলা এগ্রোভেট লিঃ)

 

সুবিধা :

এটি বিভিন্ন প্রকার আগাছা দমন করে এবং এতে ধানের কোনো ক্ষতি হয় না।

 

অসুবিধা :

ধান ক্ষেতে পানির উপস্থিতিতে ব্যবহার করা যায় না।